শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১২:১৯ অপরাহ্ন

স্থানান্তর পর্যবেক্ষণ করছে জাতিসংঘ, ভাসানচরে হাসিখুশি রোহিঙ্গারা

স্থানান্তর পর্যবেক্ষণ করছে জাতিসংঘ, ভাসানচরে হাসিখুশি রোহিঙ্গারা

স্বদেশ ডেস্ক:

আসার সময় পথজুড়ে কারও কারও মধ্যে ছিল দ্বিধার ছাপ। সেই দ্বিধা মুছে গেছে, সবার মুখ হাসি-হাসি। কক্সবাজারে, যেখানে তাদের বসবাস ছিল, সেখানে তারা থাকত বাঁশ আর তারপুলিন দিয়ে তৈরি ছাপড়া ঘরে; ঘিঞ্জি-অস্বাস্থ্যকর ও অনিরাপদ পরিবেশে। আর এখন যেখানে তাদের নিয়ে আসা হয়েছে, তা খুবই স্বাস্থ্যকর ও পরিকল্পিত। বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত আশ্রয়ণ প্রকল্প এটি। ভাসানচরে সরকারের নির্ধারিত এ আশ্রয়ণ প্রকল্পের আবাসকে তাই দারুণ হাসিমুখেই গ্রহণ করেছে প্রথম বহরে আসা রোহিঙ্গারা। তাদের অনেকেই এখন কক্সবাজারের শিবিরে আশ্রিত অন্য স্বজনদেরও এখানে চলে আসার কথা বলবেন বলে ভাবছেন।

রোহিঙ্গাদের এ মনোভাবকে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বিপক্ষে বাংলাদেশ সরকারের প্রাথমিক বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বরাবরই রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের বিপক্ষে অবস্থান করছিল এবং এ নিয়ে ছিল তাদের নিরন্তর সমালোচনা। সেই সমালোচনার মুখে পেরেক ঠুকে দিয়েছে ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের তুষ্টি। জাতিসংঘ জানিয়েছে, তারা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করছে।

এদিকে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাবে, কেউ কেউ এমন শঙ্কা প্রকাশ করলেও ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা এটিকে কোনো সমস্যাই মনে করছেন না। ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) কমোডর আবদুল্লাহ আল মামুন গণমাধ্যমকে জানান, এ আশ্রয়ণ প্রকল্প স্থায়ী কোনো আবাসন ব্যবস্থা নয়। এখানে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। এমনটা ভাবার কিছু নেই যে, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে শুধু কক্সবাজারে আশ্রিতদের কথা বিবেচনায় আনা হবে আর ভাসানচরে আশ্রিতরা থেকে যাবে। তিনি বলেন, যখন তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে, তখন সবাইকেই পর্যায়ক্রমে ফেরত পাঠানো হবে।

প্রসঙ্গত, এক লাখেরও বেশি মানুষের বসবাসের জন্য তৈরি ভাসানচরের আশ্রয়ণ প্রকল্পে গত শুক্রবার মাত্র ১,৬৪২ জন রোহিঙ্গা পৌঁছেছে। তবে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ধীরে ধীরে সবাইকেই এখানে নিয়ে আসা সম্ভব হবে। এ ক্ষেত্রে ভাসানচরে আসা রোহিঙ্গারা মনে করছেন, বাকি রোহিঙ্গাদের এখানে আনতে হলে আগে তাদের মন জয় করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে ভাসানচরে আসা রোহিঙ্গারা তাদের চেয়ে উন্নত জীবনযাপন করছেন।

ভাসানচরের যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় উপরকরণ সরবরাহ কিছুটা কষ্টসাধ্য হবে- এমন শঙ্কার কথা বলা হলেও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসবের আগাম প্রস্তুতি নেওয়া আছে। পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ থাকার বিষয়টিও নিশ্চিত করেছে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবসন কমিশন।

এদিকে বহুল পরিচিত এনজিও সংস্থাগুলো নানা জটিলতায় এখনো ভাসানচরমুখী না হলেও ইতোমধ্যে ২২টি এনজিও তাদের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছে। সেই সঙ্গে চরের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ শুরু করেছেন বাংলাদেশের উপকূলরক্ষীরা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877